টক-মিষ্টি স্বাদের লটকন মুখের রুচি বহু গুনে বাড়িয়ে দেয়।
ফ্লু হলে করনীয় কি জ্বর হলে করণীয় কি সর্দি হলে করণীয় কি কাশির সংক্রমণ থেকে রক্ষা পাওয়ার উপায়
টক-মিষ্টি স্বাদের লটকন মুখের রুচি বহু গুনে বাড়িয়ে দেয়।
লটকন বা নটকো এর (বৈজ্ঞানিক নাম Baccaurea motleyana)।
এটি এক প্রকার টক মিষ্টি ফল। এতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন বি এবং বি-২ আছে।বাংলাদেশ ও উত্তর-পূর্ব ভারতে ফলটি, "বুবি" বা "Bubi" নামে পরিচিত। তাছাড়া এই ফলটির "লটকা" " আঁশফল" ইত্যাদি আঞ্চলিক নাম ও আছে। ফলটি ত্রিপুরা, এবং বাংলাদেশ অঞ্চলে প্রচুর পরিমাণে ফলে। আষাঢ় শ্রাবণ মাসে সময় এটি পরিপক্ক বা পাঁকা হয়।
পরিচতি বা বিবরন:
একটি লটকন বৃক্ষ ৯-১২ মিটার পর্যন্ত লম্বা হয় থাকে, এর কাণ্ড বেটে এবং উপরের অংশ ঝোপ আকৃতির। পুং এবং স্ত্রী গাছ আলাদা হয় এবং এতে আলাদা ধরনের হলুদ ফুল হয়, উভয় রকম ফুলেই সুগন্ধি রয়েছে। ফলের আকার দুই থেকে পাঁচ সেমি হয়, এটি থোকায় থোকায় গাছে ধরে থাকে।সাধারণত ফলের রঙ হলুদ। ফলে ২-৫ টি বীজ হয়, বীজের গায়ে লাগানো রসালো অংশই খাওয়া উপযোগী , এটি জাতভেদে টক বা টকমিষ্টি স্বাদের হয় থাকে বলে । এই ফল সরাসরি খাওয়া বা এর জ্যাম তৈরি করা হয় থাকে । এর ছাল থেকে রঙ তৈরি করা হয় যা রেশম সুতা রাঙাতে ব্যবহৃত করে থাকে। ছায়াযুক্ত স্থানেই এটি ভাল জন্মায়।
লটকনের উপকারিতা:-
১.লটকনে পানির পরিমাণ বেশি থাকে। এটি শরীরকে হাইড্রেটেড রাখতে সাহায্য কর।
২. নিয়মিত লটকন খেলে এটি চর্মরোগ থেকে দূরে থাকা সম্ভব বা প্রতিরোধ করে থাকে । এটি ত্বকের রুক্ষতা ও ত্বক ফেটে যাওয়া রোধ করে থাকে।
৩. ফ্লু,জ্বর, সর্দি, কাশির সংক্রমণ থেকে রক্ষা পাওয়ার সম্ভব। নিয়মিত লটকন খেলে এ সব সংক্রমণজনিত রোগ প্রতিরোধ হয়।
৪.লটকনে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি যা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে থাকে । ভিটামিন সি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে বলে শরীরের ঘা তাড়াতাড়ি শুকাতে সাহায্য করে থাকে । ভিটামিন সি ত্বক, দাঁত ও দেহের হাড়কে সুস্থ এবং মজবুত রাখে। প্রতিদিন দুই-তিনটি লটকন খেলে ভিটামিন সি এর চাহিদা পূরণ হয়। এতে করে স্কার্ভি রোগ প্রতিরোধ করা সম্ভব হয়।
৫.লটকনে আছে ভিটামিন বি যা বেরিবেরি রোগ প্রতিরোধ সাহায্য করতে সাহায্য করে এবং চোখের রক্তনালীর সংকোচন প্রসারণ ক্ষমতাকে বৃদ্ধি করে।
৬.লটকনে রয়েছে রক্ত এবং হাড়ের জন্য বিশেষ উপকারি উপাদান আয়রন । এটি রক্তের হিমোগ্লোবিন এর পরিমান বাড়াতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এতে থাকা পটাশিয়াম এবং ম্যাগনেসিয়ামের মতো উপকারি খনিজ উপাদান রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
৭.লটকনে থাকা অ্যামাইনো এসিড ও এনজাইম দেহ গঠন, কোষের ক্ষয়পূরণ, ও কোষকলার সুস্থতা বঝায় রাখতে সাহায্য করে।
৮.লটকন খেলে বমি বমি ভাব দূর হয় এছাড়াও এটি মানসিক অবসাদ দূর করতে সক্ষম।
৯.ভিটামিন ও খনিজে ভরপুর এ লটকন রক্তের শর্করা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। ডায়াবেটিস রোগীরাও এই ফলটি খেতে পারেন। তবে অল্প পরিমাণে খাওয়াই ভালো।
১০.টক-মিষ্টি স্বাদের লটকন মুখের রুচি বাড়াতে সাহায্য করে।
১১.লটকনে ফ্যাট ও কার্বোহাইড্রেট না থাকায় সবাই এই ফলটি খেতে পারেন এছাড়াও ওজন নিয়ন্ত্রণে ভূমিকা রাখে লটকন।
সতর্কতা
প্রতিদিন যে কেউ ৩-৪ টি লটকন অনায়াসে খেতে পারে। তবে অতিরিক্ত লটকন খেলে ক্ষুধামন্দা ভাব তৈরি হতে পারে। এ ছাড়া পটাশিয়ামের পরিমাণ বেশি হওয়ায় কিডনি রোগীদের জন্য ক্ষতি কর এটি। কিডনি রোগে আক্রান্ত রোগী লটকন খেতে চাইলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।।
What's Your Reaction?