গর্ভবতী নারীর স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতি কর এই ফল
পেঁপে কি পেঁপের উপকারিতা কি পেঁপের ক্ষতিকর দিকগুলো কি
গর্ভবতী নারীর স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতি কর এই ফল
পেঁপের বৈজ্ঞানিক নাম: (Carica papaya)
এই উদ্ভিদটি Caricaceae পরিবারের সদস্য। এই ফল মানুষ কাঁচা তথা সবুজ অবস্থায় সবজি হিসেবে খেয়ে থাকে এবং পাকা অবস্থায় ফল হিসাবে খায়। এর অনেক ভেষজ অনেক গুণ রয়েছে।
পরিচিতি:
পেঁপে গাছ ছোট আকৃতির অশাখ একটি বৃক্ষবিশেষ।এর লম্বা বোটাঁযুক্ত ছত্রাকার পাতা বেশ বড় হয় এবং সর্পিল আকারে কান্ডের উপরি অংশে সজ্জিত থাকে। প্রায় সারা বছরেই ফুল ও ফল হয়। পেঁপে কাঁচা বা পাকা দুইভাবেই খাওয়া যায়। কাঁচা অবস্থায় সবজি হিসেবে এবং পাকলে ফল হিসেব । কাঁচা ফল বাইরের দিক গাঢ় কালচে সবুজ এবং পাকলে খোসা সহ কমলা রং ধারণ করে।
উৎপওি:
পেঁপে বাংলাদেশ, ভারত, আমেরিকা, ব্রাজিল সহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে হয়ে থাকে।
পেঁপের উপকারিতার সম্পর্কে:
১.মানুষের ওজন নিয়ন্ত্রণ করতে কাঁচা পেঁপে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এতে প্রচুর পরিমানে আঁশ বা ফাইবার রয়েছে। পেঁপেতে মেদ কমানোর জন্য বিশেষ কিছু উপাদান রয়েছে।
২. পেটের সমস্যা দেখা দিলে কাঁচা পেঁপে খেতে পারেন।
৩. পেঁপেতে থাকা আঁশ ক্কোষ্ঠকাঠিন্য, অ্যাসিডিটি বা অম্লতা, পাইলস ও ডায়রিয়া রোগের সমস্যা সমাধানে খুবই উপকারি
৪. কাঁচা পেঁপে দেহের সঠিক পরিামনে রক্ত সরবরাহে সাহায্য করে ।হৃৎপিণ্ডের রোগের জন্য দায়ী জমে থাকা সোডিয়াম দূর করতে সহায়তা করে। নিয়মিত পেঁপে খেলে উচ্চ রক্ত চাপের হাত থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
৫. কাঁচা পেঁপের মধ্যে উল্লেখযোগ্য দুটি এনজাইম হচ্ছে সাইমোপ্যাপিন ও প্যাপিন। এই দুটি এনজাইম প্রোটিন চর্বি ও কার্বোহাইড্রেট ভাঙতে সাহায্য করে।
৬. নিয়মিত কাঁচা পেঁপে খেলে ত্বকের সমস্যা দূর হয়। বিশেষ করে ব্রণ, ত্বকের ওপর নানা দাগ এবং মৃত কোষ সমস্যা দূর করতে পারে পেঁপে।
৭. ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগির জন্য কাঁচা পেঁপে খুবই উপকারি। কাঁচা পেঁপে বা কাঁচা পেঁপের জুস রক্তে চিনির পরিমাণ কমায় আর শরীরে ইনসুলিনের পরিমাণ বাড়ায়।
৮. প্রতিদিন দুপুর ও রাতে খাবারের পর এক টুকরো কাঁচা পেঁপে খেয়ে, এক গ্লাস পানি খেলে সকালে পেট পরিষ্কার হয়। যার ফলে গ্যাস্ট্রিক ও বদহজমের সমস্যাও দূর হয়।
৯. পেঁপের পুষ্টিগুণ মেয়েদের জন্য সবচেয়ে উপাকারি কারণ এটি নারীদের যে কোনো ধরনের ব্যথা কমাতে কার্যকরী ভূমিকা রাখে। পেঁপের পাতা, তেঁতুল ও লবণ একসঙ্গে মিশিয়ে পানি দিয়ে খেলে ব্যথা একেবারে ভালো হয়ে যায়।
১০. পেঁপেতে আছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি, ই ও এ। । এছাড়া এতে বিদ্যমান অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট অতিরিক্ত ক্যালরি ও চর্বির পরিমাণ কমিয়ে দিতে সাহায্য করে।
কাচা বা পাকা যেভাবেই খাওয়া হোক না কেন শরীরের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে পেঁপে। কিন্তু কিছু নির্দিষ্ট সমস্যায় ভুগছেন এমন মানুষের ক্ষেত্রে পেঁপে খাওয়া ক্ষতি ডেকে আনতে পারে।
পেঁপের ক্ষতিকর দিকগুলো হলো:
১.গর্ভবতী নারীর পেঁপে খওয়া স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতি কর,কারন পেঁপে মিষ্টি জাতীয় ফল মধ্যে ল্যাটেক্স থাকে যা জরায়ুকে সংকোচন করতে পারে আর যার ফলে ঘন ঘন প্রসাব হয়।এছাড়া পেঁপের বীজ,পাতা,শিকড় গর্ভের শিশুর জন্য ক্ষতিকর।
২. পেঁপে খাওয়া হার্ট সংক্রান্ত অসুখের ঝুঁকি কমাতে পারে, যদি কেউ অনিয়মিত হৃদস্পন্দনের সমস্যায় ভুগে তাহলে পেঁপে এড়িয়ে যাওয়া ভালো। একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে পেঁপেতে অল্প পরিমাণে সায়ানোজেনিক গ্লাইকোসাইড, অ্যামিনো অ্যাসিড রয়েছে যা মানুষের পাচনতন্ত্রে হাইড্রোজেন সায়ানাইড তৈরি করতে পারে।অতিরিক্ত মাত্রায় হৃদস্পন্দনের সমস্যার উপসর্গ আরও খারাপ করে দিতে পারে।
৩.অ্যালার্জিতে আক্রান্ত রোগিদের পেঁপে থেকে অ্যালার্জি হতে পারে। যার ফলে হাঁচি, শ্বাসকষ্ট, কাশি এবং চোখ পানি আসে। পেঁপের গন্ধেও অনেকের অ্যালার্জির সমস্যা হতে পারে।
৪.পেঁপেতে প্রচুর পরিমাণে রয়েছে ভিটামিন সি,অ্যান্টি অক্সিডেন্ট ।ভিটামিন সি অধিক পরিমাণে গ্রহণ করলে কিডনিতে পাথর হওয়ার মতো সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।
৫.ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগির জন্য পেঁপে একটি উপযুক্ত ফল মনে করা হয় কারণ এটি রক্তে শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। কিন্তু যারা হাইপোগ্লাইসেমিয়ার সমস্যা আছে তাদের জন্য জন্য এটি ক্ষতিকর হতে পারে।কারণ মিষ্টি জাতীয় ফলে অ্যান্টি-হাইপোগ্লাইসেমিক বা গ্লুকোজ-হ্রাসকারী প্রভাব থাকে। যার ফলে হাইপোগ্লাইসেমিয়ায় আক্রান্ত রোগিদের রক্তের গ্লুকোজের মাত্রাকে বিপজ্জনক স্তরে নিয়ে যেতে পারে, এই কারনে বিভ্রান্তি, অস্থিরতা, এবং দ্রুত হৃদস্পন্দনের মতো সমস্যা দেখা দেয়।
What's Your Reaction?