লজ্জাবতী এক অষ্টধাতু মিলে যায় নারীর বহুরূপ।
লজ্জাবতী গাছ দেখতে কেমন ওষুধী গাছ কিভাবে চিনবো দাতেঁর মাঢ়ির ক্ষত সাড়াতে করনীয় কি যনিপথে ক্ষত হলে করনীয় কি প্রসবদ্বারের শৈথিল্য কমাতে করনীয় কি
লজ্জাবতী এক অষ্টধাতু মিলে যায় নারীর বহুরূপ।
লজ্জাবতী গাছের বৈজ্ঞানিক নাম:( মিমোসা পুডিকা এল)
বহুরুপে রুপাইত জানবো লজ্জাবতী’র গুণ শত:
পরিচয় :
এটি সংবেদনশীল উদ্ভিদ, বর্ষজীবি গুল্ম আগাছা বা ওষুধী গাছ।
কাণ্ড- লতানো থাকে ,শাখা প্রশাখায় ভরা থাকে, কাঁটাযুক্ত থাকে , লালচে রঙের হয় ,কিছুটা শক্ত হয় , সহজে পেচিয়ে টানলে ছিড়ে যাবে।
শেমপ্লান্ট এবং টাচ-মি-নট প্ল্যান্ট সহ অন্যান্য সাধারণ নামও রয়েছে।এর দ্বি-পক্ষল পাতা রয়েছে। পাতা সরু ও লম্বাটে, সংখ্যায় ২ থেকে ২০ জোড়া। উপপত্র কাঁটায় ভরা।
এর পাতা ছোঁয়া মাত্র বন্ধ হয়ে যায়। তাপের প্রভাবে, বা সন্ধ্যা বেলাতেও পাতা বন্ধ হয়ে যায়।
মূলত সিসমোন্যাস্টিক চলন -এর প্রভাবেই এর পাতা বন্ধ হয়ে যায়। থোকায় থোকায় ফুল ফোটে। এর ফলগুলো চ্যাপ্টা, বাঁকা-লম্বাটে।
তবে বর্তমানে বিশ্বের সব জায়গায় এটি ছড়িয়ে পরেছে আনাচে -কানাচে।
বাংলা নাম- লজ্জাবতী, আবার কেউ কেউ লাজুক লতা বলে ডাকে।
ফুল:
উভলিঙ্গ, বৃতির সংখ্যা ৪ টি, পাপড়ী ৪টি, ফুল গুলি বেগুনী ও গোলাপী রঙের।
ফল:
দেখতে চ্যাপ্টা এবং একত্রিত হয়ে থাকে। মে মাস থেকে জুন মাসের মধ্যে ফুল আসে। জুলাই এবং আগষ্ট মাসের মধ্যে ফুল থেকে ফল হয়। এবং জানুয়ারি মাস থেকে ফেব্রুয়ারি মাসের মধ্যে বীজ থেকে চারা গজায়।
বৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস:
জগৎ: Plantae.
(শ্রেণীবিহীন): Angiosperms.
(শ্রেণীবিহীন): Eudicots.
(শ্রেণীবিহীন): Rosids.
বর্গ: Fabales.
পরিবার: Fabaceae.
উপপরিবার: Mimosoideae.
গোত্র: Mimoseae.
গণ: Mimosa.
গুনাগুন ও উপকারিতা:
লজ্জাবতী গাছের গুনাগুন ও উপকারিতা সম্পর্কে জানাবো তাহলে আর কোনদিনই অবশ্যই অবহেলা করবেন না।
উপকারী অংশঃ
পাতা ও মুল। পাতায় এ্যাকোলয়ড়ে ও এড্রেনালিন এর সব উপকরণ থাকে। এছাড়াও (মড়ৎরহং) টিউগুরিনস্ এবং মুলে ট্যানিন থাকে।
ব্যবহারঃ
-দাতেঁর মাঢ়ির ক্ষত সাড়াতে গাছসহ ১৫ থেকে ২০ সে.মি. লম্বা মূল পানিতে সিদ্ধ করে সে পানি দিয়ে কয়েক দিন দিনে ৩ বার কুলকুচা করলে ভালো হয়। সাদা ফুলের লজ্জ্বাবতীর পাতা ও মুল পিষে রস বের করে নিয়মিত খেলে পাইলস্ ও ফিস্টুলায় আরাম পাওয়া যায়।
ঔষধি গুণাবলী:
লজ্জাবতী লতার সমগ্র উদ্ভিদ ঔষধ হিসাবে ব্যবহৃত হয়। এর আছে অনেক ঔষধি গুণ।
১:মিথুন দন্ডের শৈথিল্য-
লজ্জাবতীর বীজ দিয়ে তৈরি তেল লাগিয়ে আস্তে আস্তে মালিশ করলে তা দৃড় হয়ে উঠে।
২:যৌনি ক্ষতে -
যে কোন কারনে যনিপথে ক্ষত হলে, প্রথমিক স্তরে মাঝে মাঝে অথবা প্রায় রোজই অল্প স্রাব চলতে থাকে,
একটা আশটে গন্ধ, কখনো বা একটু লালচে স্রাব হয়, এসব ক্ষেত্রে চিকিৎসক সাবধান করে থাকেন, এটি পরিণামে ক্যান্সার হয়ে যেতে পারে
এক্ষেত্রে দুধ-জলে সিদ্ধ করা লজ্জাবতীর কাথ দিনে ২ বার খেলে এ রোগ উপশম হয়। একই সাথে লজ্জাবতীর ক্বাথ দিয়ে ডুশ দিলে বা যোনিপথ ধুলে তাড়াতাড়ি ক্ষত সেরে যায়।
৩:আঁধার যোনি ক্ষতে -
এ বিচিত্র রোগটি কৃষ্ণপক্ষে বেড়ে যায় আর শুক্লপক্ষে শুকাতে থাকে বলে । এ ক্ষতটি হয় সাধারণত হাটুর নিচে আর না হয় কুঁচকির দু’ধারে হয়ে থাকে।
এক্ষেত্রে গাছ ও পাতা মূল ১০ গ্রাম শুধু জল দিয়ে ক্বাথ করে খেতে হবে এবং ঐ ক্বাথ দিয়ে মুছতে হবে , ফলে অসুবিধা দুর হয়ে যায়।
৪:রমনে অতৃপ্তি -
কয়েকটি সন্তান হওয়ার পর প্রসবদ্বারের শৈথিল্য হয়ে যায় , সেটার অনেকটা মেরামত করে দিয়ে থাকে বলে লজ্জাবতীর ক্বাথের ডুশ নেওয়ায়।
আর গাছের পাতা সিদ্ধ ক্বাথ দিয়ে তৈরি তেলে ন্যাকড়া ভিজিয়ে পিচুধারণ কারালে ( Vaginal plugging ) এছাড়া অন্ডকোষের পানি জমা সারাতে পাতার পেস্ট ব্যবহার করা হয়।
৫:আমাশয় -
অনেকের আছে অনেক পুরানো আমাশয় । মল ত্যাগের বেগ হলে আর বেশিক্ষণ অপেক্ষা করতে পারে না । গিয়ে প্রথমে যা হয় তারপর আর একদমই হতে চায় না ।আবার অনেকের শক্ত মলের গায়ে সাদা এবং লালচে আম জড়ানো থাকে।
এক্ষেত্রে ১০ গ্রাম লজ্জাবতীর ডাঁটা এবং পাতা ৪ কাপ পানিতে সিদ্ধ করে নিতে হবে। ১ কাপ থাকতে নামিয়ে ছেঁকে নিবেন। এ ক্বাথ খেলে অবশ্যই উপকার পাবেন।
৬:দুর্গন্ধ দুর করতে -
অনেকের ঘামে দুর্গন্ধ হয় এবং জামায় বা গেঞ্জিতে হলদে দাগ লাগে, এক্ষেত্রে লজ্জাবতী গাছের ডাঁটা ও পাতার ক্বাথ তৈরি করে বগল ও শরীর মুছতে হবে বা লাগাতে হবে। তাহলে এ অসুবিধা দুর হবে।
কোষ্ঠকাঠিন্য : অনেকের মল গুলটে হয়ে যায়, বুলেটের মত কয়েকটা বের হয়, আর কিছুই নেই। এক্ষেত্রে মূল ৭ / ৮ গ্রাম থেঁতো করে সিদ্ধ করতে হবে এবং ছেঁকে ঐ পানিটা খেতে হবে । তাহলে উপকার হবে।
বিশেষ দ্রষ্টব্য :
ধারাবাহিক ভাবে তা আলোচনা করা হলো
(সর্বক্ষেত্রে ডাক্তারের পরামর্শ বাধ্যতা মূলক)
What's Your Reaction?